সিলেটে পু’লিশ ফাঁ’ড়িতে নি’র্যাতনে রায়হান নি’হতের মা’মলায় প্র’ধান আ’সামি এস’আই (ব’রখাস্ত) আকবরকে পেতে ভা’রতীয় আশ্রয়দাতাকে ১২ লাখ টাকা দিতে হয়েছে সিলেট জে’লা পু’লিশকে।চুক্তি অনুযায়ী উমখিয়াং পুঞ্জির খা’সিয়াদের হা’তে আকবরকে হ’স্তান্তর করে আশ্রয়দাতা আসামের শিলচরের কইপত্যপাড়া এলাকার বা’সিন্দা গোপাল দাস। কথা অনুযায়ী আকবরকে ডোনা সী’মান্তে হ’স্তান্তর করে ৯ নভেম্বর সকাল ৯টায়।
টাকার বিনিময়ে আকবরকে হ’স্তান্তরের চু’ক্তি হয় ৫ নভেম্বর। ৮ নভেম্বর গোয়াহাটি নেয়ার কথা বলে শিলচর থেকে তাকে ডোনা সী’মান্তে আনে গোপাল। এমন তথ্য দিয়েছে পু’লিশের একটি সূত্র। এছাড়া বেশ কিছু তথ্য-উপাত্তও যুগান্তরের কাছে রয়েছে।
গ্রে’ফতারের পর পু’লিশের কাছে আকবরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ১২ অক্টোবর বিকালে বন্দর ফাঁ’ড়ি থেকে পা’লিয়ে গিয়ে রাতে শহরেই অবস্থান করে আকবর। পরদিন বিকালে স্থানীয় সাং’বাদিক নোমানের সঙ্গে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ এলাকার ভোলাগঞ্জ যায়। সেখানে এক না’রী জনপ্রতিনিধির বাসায় রাত্রিযাপন করে।
এবং সেই জ’নপ্রতিনিধির স্বা’মীর মাধ্যমেই পরদিন ১৪ অক্টোবর ভোরে ভারতের মাঝাই গ্রামে নরেশ সিংহ নামের এক চুনাপাথর ব্যবসায়ীর বাসায় ওঠে। সেখানে ৪ রাত্রি অবস্থান করে আকবর। এদিকে বাংলাদেশের পুলিশ ভা’রতীয় খাসিয়া ও নরেশের বন্ধু পান্নার মাধ্যমে নরেশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। কিন্তু নরেশ জানায়, তার কাছে আকবর নেই।
নরেশ সিংহ ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে আকবরকে মাঝাই গ্রাম থেকে সরিয়ে আসামের শিলচরে পাঠায়। সেখানে নরেশের বন্ধু পান্নার আত্মীয় গোপাল দাসের বাড়িতে ওঠে আকবর। জে’লা পু’লিশের একটি সূত্র জানায়, নরেশের কাছে আকবরকে না পেলেও গোপালের তথ্য পায় জে’লা পু’লিশ। সেই তথ্য অনুযায়ী জকিগঞ্জ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রফতানিকারক ভা’রতীয় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে পু’লিশ।
সেই ব্যবসায়ীর মাধ্যমেই পুলিশ নিশ্চিত হয় গোপালের বাড়ি শিলচরের কইপত্যপাড়ায়। পরে সেই ব্যবসায়ীর মাধ্যমেই গোপাল দাসের সঙ্গে আকবরকে ফি’রিয়ে দেয়ার আলোচনা শুরু হয়। প্রথমে রাজি না হলেও পরে সে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ফি’রিয়ে দিতে রাজি হয়। প্রথমে সে ৫০ লাখ টাকা দা’বি করে। ২ নভেম্বর পু’লিশকে আকবরের ছবি পাঠানো হয়।
পুলিশও নিশ্চিত হয়। তবে ৫০ লাখ টাকা চাওয়ায় পু’লিশ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। দু’দিন পর গোপাল নিজেই ফোন করে। পরে ৫ নভেম্বর চুক্তি হয় ১০ লাখ টাকায়। কিন্তু কীভাবে কোন সী’মান্ত দিয়ে তাকে গ্রহণ করবে তা নিয়ে সময় চলে যায়। পরে ৭ নভেম্বর কানাইঘাটের ডোনা সী’মান্ত দিয়ে তাকে ফেরত দিতে রাজি হয় গোপাল। কিন্তু নতুন বি’পত্তি বা’ধে টা’কা নিয়ে।
গোপাল জানায়, তাকে ১০ লাখ ভা’রতীয় রুপি দিতে হবে; যা বাংলাদেশি টাকায় ১২ লাখ টাকা। পরে পু’লিশ সিলেটের জাফলং থেকে ভা’রতীয় ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ১০ লাখ রুপি সংগ্রহ করে। স্থান নিশ্চিত হওয়ায় ৮ নভেম্বর সেই ডোনা সী’মান্তের খা’সিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জে’লা পু’লিশ। তার পর গোপাল আকবরকে জানায়, সে শিলচরে নি’রাপদ নয়, তাকে ভা’রতীয় পু’লিশ খুঁ’জছে। তাই তাকে গোয়াহাটির এক আত্মীয়র বাসায় রেখে আসবে। গোয়াহাটির কথা বলে তাকে গাড়িতে করে নেয়া হয় সেই ডোনা সী’মান্তে।
এর আগে ৮ নভেম্বর সেই এলাকার খা’সিয়াদের সঙ্গে আলোচনা করে আসে সিলেট জে’লা পুলিশ। আলোচনা অনুযায়ী ৯ নভেম্বর সকাল ৯টায় খা’সিয়ারা পু’লিশের দেয়া ১০ লাখ রুপি গোপালের কাছে হস্তান্তর করে আকবরকে তাদের কাছে নেয়। এরপরই চলে যায় গোপাল। এ সময় আকবরকে খাসিয়ারা নানাভাবে জি’জ্ঞাসাবাদ করে। সে সময় এক ভিডিওতে আকবরকে বলতে শোনা যায় ‘ম্যা’রা ভাই গোপালকো ফোন লাগাও।’
আগের দিনই স্থানীয় রহিমসহ কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করে ভা’রতীয় খা’সিয়াদের হা’ত থেকে আকবরকে কীভাবে নিয়ে আসবে তা নিয়ে আলোচনা করে কানাইঘাট থানার ওসি। সেই ছবিও যুগান্তরের হাতে এসেছে। সেই রহিমকে আগের রাতে ১৫ হাজার টাকা দেয় পুলিশ। পরে রহিম তার লো’কজন নিয়ে সকালেই সী’মান্তে যায়।
পরে পুলিশের কথামতো দুপুর ১২টার দিকে আকবরকে নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রহিমসহ স্থানীয় ৫ জন। পরে পুলিশ তাদের হা’ত থেকে আকবরকে গ্রে’ফতার করে।