২০২০। করোনাকাল। বদলে গেছে পুরো বিশ্ব। পরিবর্তন এসেছে জীবনযাত্রায়। বদলে গেছেন লিওনেল মেসিও। বার্সেলোনার সমার্থক হয়ে যাওয়া আর্জেন্টাইন মহাতারকা আগস্টে কী হইচই না ফেললেন ক্লাব ছাড়তে চেয়ে। শেষ পর্যন্ত চুক্তির জটিলতায় তা আর হয়ে ওঠেনি। তবে মাঠে একটু হলেও বদলেছে মেসির ভূমিকা। সেটির প্রভাবই কি পড়েছে পরিসংখ্যানে?
গোল করাটা যাঁর কাছে ছেলেখেলা, সেই মেসিকে বছরের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় খুঁজতে গিয়ে অবিশ্বাস্যে চোখ কচলাতে হচ্ছে। ‘চোখে নিশ্চয় সমস্যা হয়েছে’—তালিকার ওপরের দিকে মেসির নাম না দেখে অনেকেই চোখের ডাক্তারের কাছে যাওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিতে পারেন। তাঁদের আর দোষ কী! ২০২০ সালে সারা বিশ্বের প্রথম থেকে তৃতীয় স্তরের লিগ ম্যাচ ও মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট ও অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ মিলিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় মেসির নাম যে ৩১ নম্বরে।
গতকাল পর্যন্ত ২০২০ সালে বার্সার জার্সিতে মেসির গোল ২৬টি। শুধু গোলের হিসাব করলে অবশ্য আরও সাতজনের সঙ্গে যৌথভাবে ২৪ নম্বরে থাকেন গত সপ্তাহে এক ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড গড়া মেসি। কিন্তু গোলপ্রতি কত মিনিট লেগেছে, সেই হিসাবেই ওই সাতজনের চেয়ে পিছিয়ে সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার।
২০২০ সালে ৪৪ ম্যাচে ২৬ গোল মেসির। প্রতি ১৫১ মিনিটে এবার একটি গোল পেয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
২০২০ সালে ৪৪ ম্যাচে ২৬ গোল মেসির। প্রতি ১৫১ মিনিটে এবার একটি গোল পেয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। বছরটা শেষ হওয়ার আগে অবশ্য আরেকটি ম্যাচ খেলবে মেসির বার্সা। মঙ্গলবার এইবারের বিপক্ষে সেই ম্যাচে একাধিক গোল পেলে অবশ্য মেসি উঠে আসতে পারেন শীর্ষ ১৫-তেই।
এই মেসি ২০১৯ সালেই বার্সার হয়ে ৪৮ ম্যাচে ৪৫ গোল করেছিলেন। গত বছর প্রতি ৮৬ মিনিটেই একটি গোল করা মেসি ছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তৃতীয় স্থানে। ৪৮ ও ৫৪ গোল করে মেসির চেয়ে ওপরে ছিলেন শুধু বায়ার্ন মিউনিখের রবার্ট লেভানডফস্কি ও সৌদি আরবের ক্লাব আল-নাসরের মরোক্কান সেন্টার ফরোয়ার্ড আবদেররাজাক হামদাল্লাহ।
২০২০ সালে ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোল গত বছরের দ্বিতীয় লেভানডফস্কির। বছরের সেরা ফুটবলারের স্বীকৃতি ফিফা দ্য বেস্ট জেতা বায়ার্ন স্ট্রাইকার এ বছর ৪০ ম্যাচে গোল করেছেন ৪৫টি। প্রতি ৭৮ মিনিটেই এবার একটি গোল পোলিশ তারকার।
বায়ার্নকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানোর নায়ক লেভার পরেই আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। মেসির প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী এবার জুভেন্টাসের হয়ে ৩৯ ম্যাচে করেছেন ৪১ গোল। এবার প্রতি ৮৩ মিনিটে একটি গোল পর্তুগিজ মহাতারকার। ২০১৯ সালে অবশ্য অবিশ্বাস্য রকম পিছিয়ে ছিলেন সিআর সেভেন। ২৫ গোল করা রোনালদোর নাম ছিল ৯০ নম্বরে।
৪৭ ম্যাচে ৩৫ গোল করে এবার তিনে আছেন ইন্টার মিলানের বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু। শীর্ষ পাঁচের পরের দুটো নামও পরিচিত—চিরো ইম্মোবিলে ও আর্লিং হরলান্ড। লাৎসিওর ইতালিয়ান স্ট্রাইকার ইম্মোবিলের গোল ৩৪টি, বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড হরলান্ডের গোল ৩৩টি।
হরলান্ডের সমান ৩৩ গোল করলেও মিনিট/গোলের হিসাবে পিছিয়ে আছেন দক্ষিণ কোরিয়ান ক্লাব উলসান হুন্দাইয়ের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার জুনিয়র নেগ্রাও ও সুইজারল্যান্ডের ইয়াং বয়েজের ক্যামেরুনিয়ান স্ট্রাইকার জাঁ-পিয়ের এনসামে।
২০২০ সালে ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোল
গোল | খেলোয়াড় | ক্লাব | ম্যাচ | মিনিট/গোল |
---|---|---|---|---|
৪৫ | রবার্ট লেভানডফস্কি | বায়ার্ন | ৪০ | ৭৮ |
৪১ | ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো | জুভেন্টাস | ৩৯ | ৮৩ |
৩৫ | রোমেলু লুকাকু | ইন্টার মিলান | ৪৭ | ১০৭ |
৩৪ | চিরো ইম্মোবিলে | লাৎসিও | ৩৯ | ৯৭ |
৩৩ | আর্লিং হরলান্ড | ডর্টমুন্ড | ৩২ | ৭৩ |
*সব পরিসংখ্যান গতকাল পর্যন্ত
তথ্যসূত্র: ট্রান্সফারমার্কেট