পৃথিবীতে কে জান্নাতি আর কে জাহান্নামি—এ বিষয়ে কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন স্থানে বর্ণনা করা হয়েছে। কোরআনের এক স্থানে বর্ণিত হয়েছে, ‘অনন্তর যে সীমা লঙ্ঘন করে এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দেয় জাহান্নামই হবে তার আবাস। পক্ষান্তরে যে তার রবের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস। ’ (সুরা : নাজিয়াত, আয়াত : ৩৭-৪১)
প্রখ্যাত হাদিসগ্রন্থ সহিহ মুসলিম শরিফে একটি দীর্ঘ হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
অতঃপর তিনি বলেন, তোমাকে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে এবং তোমার দ্বারা অন্যদের পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে আমি তোমাকে দুনিয়ায় প্রেরণ করেছি। তোমার প্রতি আমি এমন কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাকে পানি কখনো ধুয়ে-মুছে ফেলতে পারবে না।
ঘুমন্ত ও জাগ্রত অবস্থায় তুমি সেটা পাঠ করবে।
…আল্লাহ তাআলা বলেন, কোরাইশরা যেভাবে তোমাকে বহিষ্কার করেছে ঠিক তেমনি তুমিও তাদের বহিষ্কার করে দাও। তুমি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো। আমি তোমাকে সাহায্য করব। ব্যয় করো আল্লাহর পথে, তোমার জন্যও ব্যয় করা হবে।
তুমি একটি সেনাদল প্রেরণ করো, আমি অনুরূপ পাঁচটি বাহিনী প্রেরণ করব। যারা তোমার আনুগত্য করে তাদের সঙ্গে নিয়ে যারা তোমার বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো।
তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতি হবে। প্রথমত সেসব মানুষ, যারা রাষ্ট্রীয় কর্ণধার, ন্যায়পরায়ণ, সত্যবাদী এবং নেক কাজের তাওফিক লাভে ধন্য। দ্বিতীয়ত যেসব মানুষ, যারা দয়ালু এবং আত্মীয়-স্বজন ও মুসলিমদের প্রতি কোমলচিত্ত। তৃতীয়ত ওই শ্রেণির মানুষ, যারা পূতপবিত্র চরিত্রের অধিকারী, যাঞ্চাকারী নয় এবং সন্তানাদি সম্পন্ন লোক। অতঃপর তিনি বলেন, পাঁচ ধরনের মানুষ জাহান্নামি হবে। এক. এমন দুর্বল মানুষ যাদের মধ্যে পার্থক্য ক্ষমতা নেই, যারা তোমাদের এমন তাঁবেদার যে না তারা পরিবার-পরিজন চায়, না ধনৈশ্বর্য। দুই. এমন খিয়ানতকারী মানুষ, সাধারণ বিষয়েও যে খিয়ানত করে, যার লালসা কারো কাছে লুক্কায়িত নয়। তিন. ওই ব্যক্তি, যে তোমার পরিবার-পরিজন এবং ধন-সম্পদের বিষয়ে তোমার সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা করে। অবশেষে তিনি কৃপণতা, মিথ্যা বলা এবং গালমন্দ করার কথাও বর্ণনা করেছেন। (মুসলিম শরিফ, হাদিস : ৭০৯৯