করোনার অতি সংক্রামক ল্যামডা ভ্যারিয়েন্টে বিপর্যস্ত পেরু। দেশটির প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ৬০০ লোকে এই ভ্যারিয়েন্টে মারা যাচ্ছে। বিপর্যয় কাটাতে দেশটি চীনের সিনোফার্ম, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ফাইজার টিকা প্রয়োগ করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গত এপ্রিল থেকে শুরু করে পেরুতে ৮১ শতাংশ রোগী ল্যামডায় সংক্রমিত হয়েছে।
এ ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট সি.৩৭ নামেও পরিচিত। ল্যামডা ভ্যাকসিনকেও কাবু করে ফেলে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেও এর সতত্যা মিলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট ভ্যাকসিনের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের একজন মুখপাত্র সম্প্রতি নিউজউইককে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪টি অঙ্গরাজ্যে গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত এক হাজার ৩০০টিরও বেশি ল্যামডা সিকোয়েন্স পাওয়া গেছে।
গ্লোবার সায়েন্স ইনিশিয়েটিভ সংস্থা জিআইএসএইডের মতে, ল্যামডা দক্ষিণ আমেরিকারের আটটি দেশে ও বিশ্বজুড়ে ৪১টি সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
জাপানের গবেষকরা দেখেছেন যে ল্যামডার স্পাইক প্রোটিনের তিনটি পরিবর্তন রয়েছে; যা মূল ভাইরাসের চেয়ে বেশি সংক্রমক করে তোলে। এর স্পাইক প্রোটিনের অন্য দুটি মিউটেশন ভ্যাকসিন অ্যান্টিবডিগুলোর চেয়ে প্রায় দেড়শ গুণ বেশি শক্তিশালী করে তোলে। স্পাইক প্রোটিন হলো ভাইরাসের অংশ। এটি মানব কোষের সাথে সংযুক্ত করে।
তবে ল্যামডা নিয়ে তাদের গবেষণা এখনও চূড়ান্ত পর্যালোচনা করা হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ভ্যারিয়েন্টকে ‘কৌতূহল’ হিসেবে দেখেছেন। তখন বিশেষজ্ঞরা এ নতুন ধরনটিকে ততটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু গত কয়েক মাসে ল্যামডা ছড়াতে শুরু করেছে। জাপানের বিজ্ঞানীরা বলছেন ল্যামডাকে ‘কৌতূহল’ হিসেবে দেখার কোনো অবকাশ নেই। এই ভ্যারিয়েন্ট খুবই ‘উদ্বেগজনক’। আসছে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজার ৩০০ ল্যামডা শনাক্তকারীর মধ্যে নতুন সংক্রমণের হার মাত্র ০ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে ডেল্টার ৯৩ শতাংশ সংক্রমণই নতুন। কাজেই রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বুঝতে পারছে না যে ল্যামডা আসলে ভয়ংকর কিনা?
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রেসপন্স টিমের টেকনিক্যাল লিডের একজন মহামারি বিশেষজ্ঞ মারি ভ্যান কেরখোভ সম্প্রতি বলেছেন, ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট একবার কোনো দেশে ছড়িয়ে পড়লে তা বন্ধ হবে বলে মনে হয় না।